Header Ads Widget

Responsive Advertisement

জিনিস ক্ষুদ্র, অথচ রাইডারকে সীমাহীন যন্ত্রণা দেবার ক্ষমতা তার !


“এই তো মাত্র চারদিন আগে টায়ারে সঠিক নিয়মে হাওয়া দিলাম। কিন্তু আজকে হাওয়া কমে গেল?” অথবা “ইদানিং মোটর সাইকেল ভারভার লাগছে কেন?” অথবা “টায়ার ঠিক আছে, টায়ার জেলও দেয়া আছে, কিন্তু এতো স্বল্প সময়ের মাঝে কেন হাওয়া কমে যাচ্ছে?” অথবা “আরে কি যে হলো- মোটর সাইকেলের পেছনটা ডানবাম করে দুলছে কেন?”

মোটর সাইকেল রাইডারদের কাছ থেকে এমন কথা বেশ শোনা যায়। কিন্তু আসলে কেন এমন হতে পারে?

সঠিকভাবে কারণ সনাক্ত না করে অনেক রাইডার দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে সার্ভিস সেন্টারে দিলখোলা হয়ে টাকা খরচা করে ফেলেন। কিন্তু কদিন পরে আবারও একই অভিযোগ আসে রাইডারের মুখ থেকে।

প্রথম প্যারায় লিখা সমস্যাগুলো যেসব কারণে হয়, তার মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে- চাকার বলটিউব ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায়। খুব ক্ষুদ্র একটি জিনিস। অথচ এটি রাইডারের কপালে দীর্ঘস্থায়ী ভাঁজ ফেলে দেবার ক্ষমতা রাখে।

আমাদের দেশে বলটিউব শব্দটি বালটিউব নামেই শোনা যায় সবচেয়ে বেশি।

কেউ হয়ত ভাবতে পারেন, আরে কী বলে এসব? আমার মোটর সাইকেলের টায়ার তো টিউবলেস, এখানে আবার বলটিউব কোথা থেকে আসবে?

ভাবুকের মাথায় এ প্রশ্ন উদ্রেক হবার একমাত্র কারণ হচ্ছে- বলটিউব শব্দটির শেষে টিউব রয়েছে। আসলে এটি দ্বারা টিউবলেস চাকা বা টিউব চাকাকে বোঝানো হয় না। টায়ার টিউব যুক্ত হোক বা না হোক- বলটিউব ঠিকই থাকে।

 

নজেল

ক্ষুদ্র এই জিনিস নজেলের ঠিক মাঝখানে আটকানো থাকে। আর নজেল হচ্ছে- যেখান দিয়ে হাওয়া টায়ারের বা টিউবের ভেতরে প্রবেশ করে। ভেতরে প্রবেশ করা বাতাস যেন বাইরে বের হতে না পারে, সে গুরুদায়িত্বটি-ই পালন করে বলটিউব।

বলটিউব বিভিন্ন কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ব্যবহার হতে হতে স্বাভাবিকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়া। অপরটি হচ্ছে টিউবলেস টায়ারে জেল থাকার প্রভাবে। কেননা, টায়ারের মধ্যে জেল থাকা অবস্থায় টায়ার ঘূর্ণয়নের সাথে জেলও ঘুরতে থাকে। এতে বলটিউব যে স্থানে থাকে সেটিও জেল দ্বারা প্লাবিত হয়। এভাবে বলটিউব ব্লক হয়ে যায়। ক্রমাগত এটি হতে হতে, বলটিউব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে, তখন পরিবর্তন করা ছাড়া উপায় থাকে না।

দোষটা তাহলে কার? টায়ার জেলের?

হ্যাঁ, তা তো বটেই। টায়ার জেল না থাকলে বলটিউব আরও অনেকদিন সার্ভিস দিতে পারত।

তাহলে কী করব? টায়ার জেল দেয়া বাদ দেব?

নাহ্, সেটা করার দরকার নেই। বলটিউব বদলানো লাগলে বদলানো ভাল। এর দাম অত্যন্ত কম, একপিস বলটিউব দোকানভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকা নিতে পারে।

অন্যদিকে, টায়ার জেল না দেবার ফলে যদি টায়ার পাংচার হয়ে পথে আটকে থাকতে হয় বা মোটর সাইকেল ঠেলে মেরামতখানায় নিয়ে যেতে হয়, সেটার মূল্য বিবেচনা করে দেখুন?

 

ইয়ামাহা আর১৫ ভার্সন থ্রি এর সামনের চাকা

বলটিউব ক্ষতিগ্রস্থ হলে এটা রাইডারকে তিলে তিলে ভোগাবে। যেমন- টায়ার থেকে এমন পরিমাণে হাওয়া বের হতে থাকবে, যা সাধারণভাবে বোঝা যাবে না। একটা সময় দেখা যাবে- মোটর সাইকেল একটু ভারভার লাগছে, যার দরুণ, মোটর সাইকেল কথামতন দৌঁড়াতে চাচ্ছে না।

অবশ্য আউটলেট ভাল্বের গ্যাপ কমে গেলেও মোটর সাইকেল ভারভার পরিলক্ষিত হয়। এজন্য যখনই মনে হবে- মোটর সাইকেল ভারভার লাগছে, তখনই সবার আগে উভয় টায়ারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ১০০% নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন যে, টায়ার ঠিক আছে।

না হলে দেখা যাবে, সমস্যা টায়ারে হাওয়া না থাকা নিয়ে। কিন্তু সেটার পেছনে না গিয়ে কাজ করানো হচ্ছে ভাল্বে। তখন সময় এবং অর্থ- উভয়ের অপচয় ঘটবে। সমস্যার সঠিক সমাধানও আসবে না।

 

বলটিউবের পাতা

যে কোনো চাকা মেরামতের দোকানে বলটিউব পাওয়া যাবে। তারাই এই জিনিস টায়ারে বসিয়ে দেবেন। সময় লাগবে ১ থেকে ২ মিনিট। একটি বলটিউব দোকান ভেদে দাম নিতে পারে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

ঠিক আছে তো? বোঝা গেল? এই ছোট্ট একটা জিনিসের গুরুত্ব?

আজকে তবে পালাই। কথা হবে নতুন বিষয় নিয়ে নতুন পোস্টে। নিয়মিত টায়ারের স্বাস্থ্য সঠিকভাবে পরীক্ষা করতে একদমই ভুল করবেন না। না হলে কিন্তু খবর আছে!



আরও পড়ুন :




পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ। শেয়ার করার মাধ্যমে ওয়েবসাইটকে সমর্থন করবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ