নাজমুল হুদা তুষার :
FCB এর সাথে প্রথম ভয়েজে অংশ গ্রহণের জন্য ঢাকা থেকে আমরা সিলেটের উদ্দেশ্যে প্রথমে ১৪টা মোটর সাইকেল রওয়ানা দিই। সময় ছিল ৫০তম বিজয় দিবসের দিন সকাল। ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসে চট্টগ্রাম থেকে আসা আমাদের আরও তিনজন ভ্রমণসঙ্গীকে গ্রহণ করি। তিনজনেরই তিনটা মোটর সাইকেল ছিল। তারা হলেন- শামীম ইফতেখার, মাহবুব আলম, আমিনুল রাকিব।
প্রথমদিনের রাতে নিরাপদে সিলেটের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরের কোলে পৌঁছে যাই সবাই। শীতের মধ্যে ওইখানে রাতে তাবুতে রাত্রি যাপনের অভিজ্ঞতা ছিল অন্য রকম আনন্দের। তাবুর কাছেই ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের ভয়াবহ সৌন্দর্য আমার মনের জায়গা দখল করে নিয়েছিল। এখানে তাবুতে থাকা আমার জীবনের প্রথম তাবুতে থাকার ঘটনা। সবকিছু মিলে জীবনের একটা অন্যরকম আনন্দ ও সৌন্দর্য উপভোগ করেছি, যেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতন না।
তাছাড়া এফসিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ ভাই এবং সদস্য গণেশ রায় শান্ত ভাই- এই দুই জনের ৪০ ঘোড়ার নাক ডাকার অভিজ্ঞতাটাও ছিল চরম মাত্রার অফ রোডিং এর মতো। ১৭ ডিসেম্বর দিন ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা সড়ক ধরে মেঘালয় পাহাড়ের গা ঘেঁষে অফ রোডিং এর মাধ্যমে বিছানাকান্দি, সিলেট, পানতুমাই ঝরনা হয়ে জাফলং, জৈন্তা হিল রিসোর্টে এ রাতে পৌঁছাই।
এই পুরো রাস্তার অপরূপ সৌন্দর্য ও ভয়াবহ মাত্রার অফ রোডিং অনেক উপভোগ করি। যা জীবনে কখনো ভোলার মতো না। অফ রোডিংটা আমরা সবাই খুব উপভোগ করেছি। এই সময় এফসিবির সদস্য অর্নব হার্দি, মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানি, খন্দকার ফারুক, মোহাম্মদ জাকারিয়া ভাই অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সহযোগিতা করেছেন আমাদের জন্য।
অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই এই ভালবাসার ভাইদের।
জৈন্তা হিল রিসোর্ট, তামাবির, সিলেট এ রাতের বারবিকিউ আসরটা সেই হয়েছিল। তারপর দিন সকালে অর্থাৎ ১৮ ডিসেম্বর সবাই রওনা দিয়ে লালাখাল, সিলেট হয়ে সোজা চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গলে চলে যাই। আগ থেকে ঠিক করে রাখা শ্রীমঙ্গলের হোটেল মেরিনাতে আমাদের স্থান হয়।
এফসিবির নবম ভয়েজের এর শেষ দিন অর্থাৎ ১৯ ডিসেম্বর লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, শ্রীমঙ্গলের এদিক ওদিক, মৌলভীবাজার, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসে সবাই বিরতি দিই। এসময় তিন জনকে বিদায় দিতে হয়, যারা চট্টগ্রাম থেকে আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। এরপরই সবাই একত্রে ঢাকার উদেশ্যে রওয়ানা দিই।
আল্লাহর রহমতে আমরা সবাই ভালভাবে রাত সাড়ে ৭টায় এ ঢাকায় এসে পৌঁছাই।
কিছু কথা না বললেই নয়, ভয়েজের প্রথমদিন এফসিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ ভাইকে আমি অনেক প্যারা দিই। প্যারা বললে ভুল হবে, আসলে এটা এক প্রকার ভালোবাসা। আসলে সিলেট-ঢাকা হাইওয়েতে প্রথমে আমার রাইড করতে সমস্যা হচ্ছিল। হামিদ ভাই, তাহসিন ইরফান, সাইফুল ইসলাম পিন্স ভাই ও আমার বন্ধু ফয়েজ ইসলামের সহযোগিতা, সাহস ও ভালোবাসায় ভালভাবে সিলেট ঘুরে আসতে পেরেছি।
রাহাত খান অমিত ভাইও অনেক কষ্ট করছেন তার GoPro দিয়ে আমাদের ভিডিও ফুটেজ নেবার জন্য। এই ভাল লাগা ও ভালবাসার ভাইবন্ধুদের আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক ভালবাসা ও ধন্যবাদ জানাই।
আমার পক্ষ থেকে এফসিবির সব ভাইদেরকে প্রতি ভালবাসা রইল। আমার জীবনে এই নবম ভয়েজ স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thanks For Comment.